নরসিংদী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহেলের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে তৃণমূলে ক্ষোভ: প্রার্থীকে পরাজিত করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
নরসিংদী প্রতিনিধি আর এ লায়ন সরকার।
নরসিংদী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া রুহেলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে রায়পুরা বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উস্কানির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
সূত্র জানায়, প্রথমে ৩১ দফা দাবি নামের ব্যানার ব্যবহার করে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্পষ্ট বিরোধিতা করেন রুহেল। এরপর নরসিংদীর আমিরগঞ্জে লোকজন জড়ো করে দলীয় মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল, নীলকুঠি বাজারে হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত অমান্য করে আরেকটি মিছিল, এমনকি ঝাড়ু মিছিল—সব মিলিয়ে রুহেলের এসব কর্মকাণ্ডে তৃণমূলে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
রায়পুরা-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাত জনের মধ্যে থেকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুলকে ধানের শীষের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়। মনোনয়ন ঘোষণার পর কিছুদিন নীরব থাকলেও পরে রুহেল ধারাবাহিকভাবে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মশাল মিছিলে নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রায়পুরা উপজেলার ২৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার তৃণমূল নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা তার পক্ষেই কাজ করব। কিন্তু রুহেলের কর্মকাণ্ডে আমরা বিভ্রান্ত হচ্ছি। তিনি যেন নিজেই দলের প্রার্থীকে পরাজিত করার ষড়যন্ত্রে নেমেছেন।”
এ বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে রফিকুল ইসলাম রুহেল বলেন,
“আমার সমর্থকেরা করছে। তারা এগুলো করতেই পারে।”
অন্যদিকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেন,
“দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মনোনয়ন পেয়েছি। রায়পুরা আসন পুনরুদ্ধার করে বিএনপিকে উপহার দেব। যারা ষড়যন্ত্র করছে, দল তাদের বিষয়টি দেখবে—এটা দলের ওপরই ছেড়ে দিলাম।”
স্থানীয় একজন রিকশা চালক বলেন,
“আমি বহুদিন বিএনপির সমর্থক। কিন্তু রুহেলের কর্মকাণ্ড লজ্জাজনক। তিনি সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ না করে বিভাজন সৃষ্টি করছেন। এমন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত।”
তৃণমূলে এখন একটাই দাবি—দলীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রায়পুরায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনী মাঠে নামা।